হিংসুটে বাদশা

 হিংসুটে বাদশা

সামীউল ইসলাম শামীম 

একদা ছিল ♚ রাজা 'বাদশা',

তার জন্ম আরবের গোত্রের নাম 'শা'।

সেনাপতি ছিল খুব বিশ্বস্ত,

রাজ্যর সকলকে দিতো আশ্বস্ত।

একদিন বাদশা কহিলেন,

সেনাপতি মহিয়েন;

নিয়েছো কী রাজ্যের কোন খোঁজ!

চাপিয়ে দিয়েছো কেন নেই কী তোমার কোন বোঝ?

সেনাপতি বলিলেন,জাহাপনা,

বলিয়াছে কেবা; চর্ম-চামারেরা?

বাদশা গেলেন চটিয়ে,

সকল প্রজাদের আনিলেন ডাকিয়া,

নেই কী তোমাদের কোন কান্ডকারখানা,

চামারেরা ঢুকিয়েছে কেবা,

আমার এই মস্ত প্রাসাদ খানা?

ডাক চামার্দের-ফর্দ করিয়ে লও;

দিয়ে দাও পঞ্চাশ ঘা পিঠে,

বাহির করিয়ে দেও আমার রাজ্যের বাহিরে।

কেঁদে-কেঁদে বলিলেন চামার,

বেশি দিন থাকিবে না আপনার প্রাসাদ,

বেঙ্গে হবে চুরমার।

সেনাপতি কহিলেন,

চুপরও যতো মিথ্যাবাদীর দল;

বাদশা কহিলেন,'নেই ভয় নেই ভয়',

কেনই বা হবে পরাজয়?

প্রজা কহিলেন,জাহাপনা;

কী ই বা বলিয়াছে গর্দব মূর্খের দল,

চিরকাল বেঁচে রবে হবে না,

আপনার কোন ক্ষয়।

চর্মকারকে গর্ধ হস্তে ধাক্কা দিয়ে,

করিয়ে দিয়েছে বের,

বেশ কিছুদিন চলিয়ে গেছে,

সুখে! 

হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে গেছে বাদশা,

ডেকে আনিলেন কবিরাজ,ডাক্তার,দরবেশ;

দরবেশ কহিলেন, হুজুর অতিশীগ্রই,

ধ্বংস হয়ে যাবে সব প্রাসাদ-সামাজ্য!

সেনাপতি রেগে মেগে ছাড়খার,

এখনি তলোয়ার দিয়ে তোমার গর্দান,

ফেলে দিব, যদি একতা,

বল আর একবার!

দরবেশ কহিলেন,নয় তো আমি বীরপুরুষ,

নয় তো মহাজ্ঞানী।

হিংসুটে বাদশা মহা ধ্বংসের,

 দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে,

একটুই বলিতে পারি আমি?

যতোই যাচ্ছে দিন ততোই কাতর হচ্ছে 'বাদশা'

বাদশা কহিলেন, সেনাপতি আমি যে,

করিয়াছি মহাপাপ;

পাব কী এর ক্ষমা?

চর্মকারকে খুঁজে আন যাকে,

করিয়ে দিয়েছিলাম বের?

প্রজারা কহিলেন, তবে কী তাহাই সত্যি হলো,

বলিয়া ছিলেন গরীব চর্মকার?

সেনাপতি কহিলেন,ফর্দ আছে হুজুর,

পাই নাই ওরে পাই নাই-

খানিকক্ষণ পরে চলিয়া যাবে;

আমার স্বাদের জীবনটাই?

চলিয়া গেলেন বাদশা,

মহারাণি কহিলেন,বাদশা আর নেই, 

সেনাপতি নিজেকে বাদশা বললিয়ে,

ঘোষণা দিয়ে রানিকে প্রাসাদ,

থেকে করিয়ে দিলেন বের।

পথে পথে ঘুরে রানি হয়ে গেছেন,

সেনাপতির বিশ্বস্ত চাকর?

নতুন বাদশার চাকরের হস্তে,

অপমানিত আর লাঞ্চিত-

হচ্ছে বার বার!

এভাবেই পতন হয়েছে,

হিংসুটে বাদশার?

Popularpoetswriter

আমি আমার অবসর সময়ে কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি।

Post a Comment

Previous Post Next Post